চতুর্থ বর্ষ -প্রথম সংখ্যা -কবিতা
খিদে
অন্বেষা দে
অভাবের নামে কুড়িয়ে রেখেছি খিদে
পাত পেরে বসে ধর্ম, রাজনীতি;
এবার ভোটে জিতলে ওরা ঠিক
মিটিবে খিদে এটা নিশ্চিতই!
খিদের ধর্ম নেই, জাতপাত নেই, না আছে কাঁটাতার;
খিদে তো সেই এঁটো থালার অভাবী অহংকার!
জমেছে খিদে পেটের ভিতর, মরছে আবার পেটেই
রাজার নীতি আঙুল তুলে বললে, খেতে খেটে।
খিদে মেটানোর বীজ বুনেছি তাই
জ্বর যখন একশো’র ঠিক মাথায়,
শবদেহতেও হয়েছে খিদের জীতই
একেই কি বলে খিদের রাজনীতি ?
The Weight Of Everything Buried
Sharmindrila
The silence between us became so heavy that I had to pause –
Pause to catch a breath and feel the heaviness in my chest.
Pause to wrap the miss around like a blanket on a chilly winter morning.
On a morning, when mists engulf your being.
Your absence became profoundly present around me,
As my mind was crowded by your words,
While nothing, simply nothing changed outside.
Now that you’re gone, who would I tell things about you?
About things only you would’ve understood?
Here I’m now, writing about YOU with tears,
So that nobody else can read it.
I wanted to tell you so much,
So I remained silent with a hope that you’d read my eyes.
But I know-
Your arrival was random, why would your departure be any different?
A Teary Tale
Sharmindrila
What happens to a tear that stops at the edge of the eyelid,
And doesn’t run down the cheek?
Does it dry up with a passing breeze?
Or does it meet your fingertips and vanish?
Or does it wait for a moment to catch a breath losing its way,
Only to find itself on the rim of my spectacles?
What actually happens to those tears that are frozen in our soul?
Those unresolved grief that turn our tears into ice?
Do we know how many light years it would take to let it melt?
What happens to those tears we hide even from ourselves?
We know those exist but still ignore them.
Do they find their way to a cold winter night, when we wake up gasping?
Holding our chest because we’re afraid that the flood gates would break?
Or do we gulp it down further with water?
Does it quench our thirst?
Or do they make us more vulnerable?
Or do they make us stronger?
Nah, they mostly make us numb for a while.
Until we pine a little.
Until we die a little.
Then it evaporates into oblivion,
Leaving an indelible mark.
মুক্তধারা
Pushan Bhattacharya
আঘাত পেয়েছো বলেই কি তবে আঘাত হানতে হবে ?
অবিশ্বাসের বিষবাষ্পের হানাহানি কলরবে।
উড়েছে ধুলো আকাশে তোমার , চোখের কোণেতে কালি
নৈঋত কোণে অবুঝ হাওয়ায় আগুন কেন জ্বালালি?
বৃষ্টি এখন চুপ করে বসে, নীরব এক দর্শক
দাবানলের মত্ত প্রবাহে সব বিরাগ ভস্ম হোক।
ছাই হয়ে যাক মনের কালিমা, গ্লানি অনুশোচনা
ক্রোধের অনলে আহুতি পাক অবুঝের যন্ত্রনা।
আবার ভাসুক আশার তরণী মায়াবতীর উজানে
অজানা ঘাটে অচেনা স্রোতে এগিয়ে যাওয়ার টানে।
তোমায় প্রশ্ন করবেনা জেনো নীল আকাশের ধ্রুবতারা
তোমার শহরে অসহায় ওরা , দিশাহীন পথহারা।
ভাবছো এখনো ? দ্বিধার পাহাড়ে এখনো আটকে তুমি?
ছিঁড়ে ফেল যত পুরোনো দলিল , চাতকের মরুভূমি।
নৈঋত কোণে এখন শান্তি , শান্ত বসুন্ধরা।
চালাও তরণী, পিছু ফির নাকো, সামনে মুক্তধারা।
প্রতিধ্বনি
অচিন্ত সেনগুপ্ত
তোমার অন্তরে খেলা করে সেই মন
অন্তর্জলী যাত্রা হয়নি তবুও সমাপন।
শেষ বিদায়ের রক্তিম মালা বুনছে এই শহর।
পথ প্রান্তে ছড়িয়ে আজও বিদায়ের বার্তা!
চন্দ্রিমা রাতের মন খারাপে অশরীরী হয়ে যায় মানব আত্মা,
শহরতলি জুড়ে রাঙা মেঘ শুধু ঝড়ের প্রতিধ্বনি,
রাত বাড়লেই ফিরতি পথে আকাশ ছোঁয়ার লক্ষ্য ভেদ শুনি।
কোমর বাঁধো
নিমাই ঘোষ
তখন অবেলা
নীড় খোঁজায় ব্যস্ত
ক্লান্ত পাখিরা
তখন সে এসে বলল
তোমার জন্য বানিয়েছি
একটা পাজামা।
ব্যস
তখনই শুরু হল
ঝোড়ো হাওয়া
হাওয়া বাড়তে বাড়তে
একেবারে প্রলয় নাচন
শুরু করল।
তা ভালো নির্জীব নিস্তব্ধ
হয়ে থাকার চেয়ে
খ্যাপামি অনেক ভাল
সবাই এবার
কোমর বাঁধো গো
কোমর বাঁধো।
কথোপকথন
অনুষ্কা সেনগুপ্ত
বসন্তের হাওয়ায় আজ বারুদের তীব্র গন্ধ
হেঁটে চলেছি দীর্ঘ পথ, বাইরে তখন যুদ্ধ আর প্রেম
‘আকণ্ঠ এক দ্বন্দ্ব।’
মনখারাপের মেঘের সাথে কথোপকথন শেষে
আজ বিকেলে বৃষ্টি নামুক পুরোনো অভ্যেসে।
ফুরিয়ে যাওয়ার আগে এসো বসি,
কথা বলি দ্বন্দ্ব ভুলে ছন্দ জুড়ি।
তোমার বুকপকেটে মেঘ জমিও,আমি সেই ভেজা শাড়ি-
এই বুঝি শেষ দেখা? দু-একটা কবিতা গান,
তারপরে জানি ফিরে যাবে কোনো এক অজানা ঠিকানায়-
আমি তখন বিকেলের কলেজ স্ট্রিটে একা!
বুকের ওপর দাগ কেটে যায়-যুদ্ধ শেষে প্রেমের স্লোগান।
স্মৃতিদেহ
ডাঃ তানাজি মুখার্জি
হঠাৎ যদি নামে বুকের ব্যথা –
হঠাৎ যদি বুঝতে পারি শেষ-
হঠাৎ চিঠি, অপ্রাসঙ্গিক কথায়-
রাখছি স্মৃতি, রাখছি অবশেষ..
তখন,
তোমায় নিয়ে আমার যত লেখা –
স্তূপ সাজানো দাহ্য জতুগৃহ..
আগুন টুকু তোমার হাতে রেখে –
স্মৃতি উস্কে ঘুমিয়ে পড়ে দেহ..
হারিয়ে গেছে তর্জমায়
সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়
বলার কিছু নেই তোমায়।
যাও বা ছিল চোখের কোণে,
হারিয়ে গেছে তর্জমায়।
এখন সন্ধেতারার দেশ-
বাসায় ফেরে একলা পাখি,
যন্ত্রণা তার অনি:শেষ।
থমথমে এক স্তব্ধতায়,
ভাবনাগুলো জমছে শুধু-
বুঝবে, এমন লোক কোথায়?
অপেক্ষাতে সময় পার।
তেমন করে ডাকলে কাছে
জড়িয়ে ধরে অন্ধকার..
এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ
ডাঃ গৌরব রায়
চাকরি চলে গেছে ছুটি নিয়ে
আমাদের হাতে
অসফল মেঘ রোদ জল
মুখের কাছে মাইক এ জানতে চাইছে
যোগ্য না অযোগ্য?
খুব সুস্বাদু TRP
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে
স্লিপিং পিল, দড়ি জানতে চাইছে
যোগ্য না অযোগ্য?
পরিবারের মুখে তুলে দিচ্ছি
নাভি পোড়া ছাই
চারপাশ তেতো হয়ে উঠছে উঁচু
আত্মহত্যা শৌচালয়ের চেয়েও সুলভ শহরে
তাই মানুষ আসলে আদমশুমারিতে সংখ্যা মাত্র
রঙিন থাবার নীচে কেমন
হাসি মুখে বসে আছে দুঃখ
এপিটাফ লিখে রেখে
বিষন্ন এই কলম বিক্রি করে দিয়ে
আবার লাইনে দাঁড়াচ্ছি
নাম লেখাচ্ছি
পাখিদের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে…
এখনো কি তোমরা নীরব থাকবে?
নিমাই ঘোষ
সেখানে এখানে আছে ছড়িয়ে,
লাল, নীল,
সবুজ, হলদে
বেগুনি রঙের
ছেঁড়া-ছেঁড়া সব
পাপড়ি ফুলের
কাকভোরে
দু’চোখ খুলে
ছেঁড়া-ফুলের
পাপড়ি দেখে
সবাই যখন আঁতকে ওঠে,
তখন সে পুব আকাশে
ঢাকা মেঘের পর্দা সরিয়ে,
বলে সে—
“এখনো কি তোমরা নীরব থাকবে?”
Forever
Sharmindrila
How long is forever?
Is it a distant future?
Or was it those moments,
Of our innumerable nows,
Stitched in the fabric of time and life?
How do I know forever is long enough?
As long as I want it to be?
How do I measure it within my mortal limitations?
For me, forever was a blink ago,
When I held you in my arms,
When our eyes watered, but we could barely move our lips.
Forever was when I knew not, this could be our last embrace.
Before the missiles shattered your body to pieces that I lost count.
Forever was the time, when our home wasn’t a blazing tent,
With melting bodies of people I once called mine.
Forever seemed beautiful until now,
Before this blip.
Now I only have a battered soul,
And nightmares for company.
Piles of butchered corpses lie beside me,
As I stare into nothingness –
The darkest night, the wasteland.
Now, I have a forever to live.
জনম
অঙ্গনা দে
মাতৃ জঠড়ে সুপ্ত নয় মাস
তারপর যেদিন কেঁদেছিলে খুব,
সবাই হেসেছিল, ছিল আনন্দাশ্রু ও;
স্নেহাশিষে কোলে তুলেছিল সকলে
শুভেচ্ছা ফুলেরা বলেছিল-
এ জীবন আরো আলোকিত হোক;
আস্তে আস্তে গুটিগুটি পায়ে পথ চলার শুরু
নবীনের অন্বেষণে জীবন ধারাপাতে
কতো সংযোজন- বিয়োজনের আলোকপাত
নাট্যমঞ্চে মহড়ার পরে মহড়া,
প্রাত্যহিক অরুণোদয় অঙ্গীকারবদ্ধ
সম্ভাবনাময় অভিনবত্বের,
রাগ ভৈরবী এসরাজের সুর-ঝংকারে অনুরণিত
অনুকম্পা তেই লুকিয়ে মুক্তির অমোঘ সত্য |
সৃষ্টিকর্তার স্নেহের পরশে
পরতে পরতে আবিষ্ট আচ্ছন্ন মন;
নব উন্মেষে এক আকাশ আশায় বুক বেঁধে
এগিয়ে চলাই জীবন,
এই মুহূর্তরাই তোমার সাথে বাঁচে
যেমনি করে সাজাও তাদের
তেমনি রূপেই সাজে | |